মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

টাঙ্গাইল আদালত চত্তরের সুস্বাদু ঝাল চাপড়ি

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৫০৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল পৌর শহরের ডিস্ট্রিক্ট আদালত চত্বর এলাকার একটি দোকানে তৈরি হয় ঝাল চাপড়ি। ইতোমধ্যে এই সুস্বাদু খাবারটি অনেকের পছন্দের তালিকায় ঢুকেছে।

টাঙ্গাইল পৌরর আদালত চত্বর এলাকায় প্রায় ২৫ বছর আগে এই ঝাল চাপড়ি বানানো শুরু হয়। এরপর থেকে এর কদর দিন দিন বেড়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। দাম কম ও সুস্বাদু খাবার হওয়ায় সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে এখন ঝাল চাপড়ি জনপ্রিয়।

এখন জেলার ১২টি উপজেলা জুড়েই এর জনপ্রিয়তা। বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়াতে বেড়েছে দোকানের সংখ্যা।

স্থানীয়দের দাবি, টাঙ্গাইলের চমচমের সুনাম যেমন সারা দেশেই, তেমনি এই ঝাল চাপড়িরও সারা দেশে সুনাম ছাড়াবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখে, টাঙ্গাইল পৌরর আদালত চত্বর এলাকায় রয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয়, জেলা পরিষদ, বিআরটিএ অফিস, পাসপোর্ট অফিস, নির্বাচন অফিস ও কাপড়ের দোকান। এখানে নানা প্রয়োজনে ভোরের আলো ফুটতেই বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসে শত শত মানুষ। আর এসব মানুষের খাবারের চাহিদা মেটাতে আদালত চত্বরে হোটেলগুলোর নানা খাবারের পাশাপাশি রয়েছে এই ঝাল চাপড়ি।

সুস্বাদু খাবার হিসেবে এরই মধ্যে ঝাল চাপড়ির বিশেষ চাহিদা তৈরি হয়েছে। তাই সকাল থেকেই চাপড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

চাপড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, ঝাল চাপড়ি তৈরিতে বিশেষ কোনো মসলা ব্যবহার হয় না। পানির সঙ্গে আটা, লবণ, কালিজিরা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে প্রথমে ভালো করে মিশানো হয়। তারপর চুলায় বিশালাকৃতির একটি কড়াইয়ে বসিয়ে তার ওপর মেশানো আটা লেপে দেওয়া হয়। এরপর আস্তে আস্তে তৈরি হতে থাকে সুস্বাদু ঝাল চাপড়ি।

মচমচা হলেই চুলা থেকে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করা হয় ক্রেতাদের কাছে। চাপড়ির সঙ্গে দেওয়া হয় কাঁচা মরিচ ভর্তা,পেয়াজ ভর্তা,ধনিয়া ভর্তা, আলু ভর্তা, শুটকি ভর্তা ও খাঁটি সরিষার তেল। সবকিছু মিলিয়ে এর দাম রাখা হয় মাত্র ২০ টাকা।

আলমগীর নামে এক চাপড়ি ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিদিন ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত ৩ হাজার টাকার চাপড়ি বিক্রি হয়। এতে ৭০০ থেকে ৮০০ লাভ থাকে। এই চাপড়ির ওজন ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই চাপড়ি বিক্রি করে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা খরচ চালিয়েও সংসার ভালোভাবে চালাচ্ছি। এখানে সব ধরনের মানুষ চাপড়ি খেতে আসে। অল্প টাকায় তাদের ক্ষুধা মেটাতে পারছেন। চমচমের সুনাম যেমন সারা দেশে তেমনি একদিন এই চাপড়ির সুনাম ছড়িয়ে যাবে দেশব্যাপী।’

আরেক ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা এখানে ব্যবসা করেছেন, আমিও করছি। এই চাপড়ির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সব শ্রেণির মানুষ এ চাপড়ি খাচ্ছে। অনেকে খেয়ে পরিবারের জন্য বাসায় নিয়ে যাচ্ছে। এই চাপড়ির চাহিদা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে একসময়। চমচমের মতো সুনাম কুড়িয়ে নেবে।’

জেলার ধনবাড়ী উপজেলা থেকে পাসপোর্ট তৈরি করতে এসেছেন জব্বার আলী। তিনি বলেন ‘আমি পাসপোর্ট করতে এসেছিলাম। দুপুর হয়ে গেছে, ক্ষুধাও লেগেছে। হোটেলে খেলে ১২০ থেকে ১৫০ টাকার নিচে খাওয়া যাবে না। পাসপোর্ট অফিসের সঙ্গেই ঝাল চাপড়ি পাওয়া যায়। সবার মুখে মুখে শুনেছি অনেক সুস্বাদু। আজ খেয়ে দেখলাম, সত্যিই অনেক তৃপ্তি পেলাম। ২০ টাকায় খাওয়া হয়ে গেল।’

সদর উপজেলার হুগড়া গ্রামের রিকশাচালক আকবর আলী বলেন ‘সকালে রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হই। সকাল ও দুপুরে ডিস্ট্রিক্ট আদালত চত্বরে এসে চাপড়ি খাই। আমরা গরিব মানুষ, হোটেলে খেলে অনেক টাকা লাগে। এত টাকা কই পাব। ২০ টাকা দিয়ে চাপড়ি খাই, ক্ষুধাও চলে যায়; টাকাও বাঁচে।’

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তারেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। টাঙ্গাইল আদালত চত্বরে কাজে এসেছি। অনেকের মুখে শুনেছি চাপড়ির কথা। আজ খেয়ে দেখলাম, অনেক মজা লেগেছে। ২০ টাকা দিয়ে দুপুরে খাবার হয়ে গেল।’

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights